কার পার্কিংয়ে অবৈধ দোকান : ব্যবস্থা নেই দায়ীদের বিরুদ্ধে

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম ।  ১৭  অক্টোবর  ২০১৬

14720359_1130929720329047_2240768017504968455_n শাহেদ শফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক

কার পার্কিংয়ে অবৈধ দোকান : ব্যবস্থা নেই দায়ীদের বিরুদ্ধে

কার পার্কিংয়ে অবৈধ দোকান : ব্যবস্থা নেই দায়ীদের বিরুদ্ধে

কার পার্কিংয়ে অবৈধ দোকান : ব্যবস্থা নেই দায়ীদের বিরুদ্ধে ফুলবাড়িয়াসহ ডিএসসিসির বিভিন্ন মার্কেটের পার্কিংয়ে রয়েছে অবৈধ দোকান

ঢাকা দক্ষিণ সিটির মালিকানাধীন ৯ মার্কেটের কার পার্কিংয়ের জায়গায় অবৈধভাবে এক হাজার ৬৩৫টি দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া অনুমোদন ছাড়াই গড়ে উঠেছে আরো ৭১৫টি দোকান। আইন ভঙ্গ করে বরাদ্দ দেয়া এসব অবৈধ দোকান উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত হলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ডিএসসিসি মালিকানাধীন ৯টি মার্কেটের কার পার্কিংয়ের স্থানে সংস্থার রাজস্ব ও সম্পত্তি বিভাগ থেকে মোট দুই হাজার ৩৫১টি দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট-১ এ ৬৮টি, মার্কেট-২ এ ৫৩১টি, পল্টন শপিং কমপ্লেক্সে ১৯টি, আহসান মঞ্জিল (নবাববাড়ি) সুপার মার্কেট ১৪৯টি, সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটে ২৩০টি, ঢাকা ট্রেড সেন্টারে ৩৪১টি দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া অবৈধভাবে কাপ্তানবাজার কমপ্লেক্স-১ এ ৩৫০টি এবং কমপ্লেক্স-২ এ ৩৬৬টি দোকান গড়ে উঠেছে।

এর মধ্যে রাজস্ব বিভাগ থেকে স্থায়ীভাবে ২৩৬টি এবং অস্থায়ীভাবে ৭৯৭টি দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অপরদিকে সম্পত্তি বিভাগ থেকে স্থায়ীভাবে কোনো দোকান বরাদ্দ দেয়া না হলেও অস্থায়ীভাবে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৬০২টি দোকান। এছাড়া এসব মার্কেটে অনুমোদন ছাড়াই গড়ে উঠেছে আরো ৭১৬টি দোকান। সব মিলিয়ে দুই হাজার ৩৫১টি অবৈধ দোকান রয়েছে এসব মার্কেটে।

গত বছরের ডিসেম্বরে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে একটি রিট করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সড়কের পার্শ্ববর্তী ভবনগুলোর কার পার্কিংয়ের স্থানে কি পরিমাণ অবৈধ দোকান রয়েছে তার তালিকা চাওয়া হয়। অপরদিকে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি রাজউকের এক সভায় সংস্থাটির আওতাধীন এলাকায় গাড়ি পার্কিংয়ের স্থানে নির্মিত সব স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশনা দেয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

এ দুটি আদেশ ও নির্দেশনার পর গত ২ মার্চ সম্পত্তি কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি কমিটি করে সিটি কর্পোরেশন। পরে সার্ভেয়ারদের মাধ্যমে অবৈধ দোকানের তালিকা প্রণয়ন করে সিটি কর্পোরেশন। প্রতিবেদনটি মেয়রের দফতরে পাঠানো হলে তিনি উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত দেন।

কর্পোরেশনের সার্ভেয়ার ও নির্বাহী প্রকৌশলীদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৯টি মার্কেটের ১১টি ভবনে ২ হাজার ৩৫১টি অবৈধ দোকান কার পার্কিংয়ের স্থানে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে। এর মধ্যে স্থায়ী বরাদ্দকৃত ২৩৬টি এবং অস্থায়ী বরাদ্দকৃত এক হাজার ৩৯৯টি দোকান বাতিল করে উচ্ছেদের ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। এছাড়া অননুমোদিতভাবে নির্মিত আরো ৭১৬টি দোকান দ্রুত উচ্ছেদের ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়।

 

এরপর প্রতিবেদনটিতে দুটি প্রস্তাব দিয়ে অনুমোদনের জন্য পেশ করা হয়। এতে বলা হয়, কমিটি কর্তৃক দাখিলকৃত প্রতিবেদনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের লক্ষে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে রাজস্ব ও প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে উচ্ছেদ ব্যয় নির্ধারণ করে উচ্ছেদ কাজ করা যেতে পারে।

পরে প্রতিবেদনটি সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দফতর হয়ে মেয়রের কাছে প্রেরণ করা হয়। মেয়র নীতিগতভাবে উচ্ছেদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এখন অনুষঙ্গিক বিষয়াধির কাজ চলছে।

ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা খালিদ আহমেদ বলেন, আইন অনুযায়ী পার্কিংয়ের স্থানে নকশাবহির্ভূত দোকান বরাদ্দ বা অন্য কিছু নির্মাণের বিধান নেই। অথচ এতে আইন লঙ্ঘন করে দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আমরা উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিছু এলাকায় অভিযানও চালাচ্ছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএসসিসির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বড় দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কখনই সিটি কর্পোরেশন ব্যবস্থা নিতে চায় না। এখানে ব্যবস্থা নেয়া হয় ছোটখাটোদের বিরুদ্ধে। বড়দের ধরলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।’

 

Related posts