শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ২১ নভেম্বর ২০১৬
পিইসিই পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একটি স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। পাশ করলে আরো একটি স্বপ্ন পূরণ হবে। ইংরেজি পরীক্ষায় ১শ’ নাম্বারের মধ্যে ৯৫ নাম্বারের উত্তর দিয়েছি।নাতিদের সঙ্গে পরীক্ষা দিয়ে বেশ আনন্দ পাচ্ছি।৬৫ বছরে পিইসিই পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বৃদ্ধা বাছিরন নেছা এভাবেই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন।
রোববার শুরু হওয়া পিইসিই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন মেহেরপুর গাংনী উপজেলার হোগলবাড়ীয়া গ্রামের বৃদ্ধা বাছিরন নেছা।
তাকে একনজর দেখার জন্য হোগলবাড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের আশেপাশে ভিড় করেছিলেন অনেক উৎসুক মানুষ।
পরীক্ষা কেন্দ্র সচিব জিয়া মোহাম্মদ আহসান মাসুম জানান, কেন্দ্রের অন্যান্য ছাত্রছাত্রীর মতই শান্তভাবে পরীক্ষা দেন বাছিরন নেছা। তিনি প্রশ্নপত্র পড়ে উত্তর লিখেছেন। পরীক্ষার পুরো সময়জুড়ে এদিক-ওদিক তাকাননি। নিজের চেষ্টায় লিখেছেন উত্তর। এ বয়সী একজন ছাত্রী তার কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয়ায় তিনি গর্বিত।
একই কথা জানালেন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদু ইসলাম । তিনি বলেন, শিক্ষার যে কোন বয়স নেই তার প্রমাণ দিলেন ৬৫ বছর বয়সী বাছিরন নেছা। তাকে দেখে অনেকেই অনুপ্রাণিত হবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেলাল উদ্দীন আহম্মেদ জানান, বাছিরনকে পড়াতে পেরে শিক্ষকরাও গর্বিত। ইচ্ছে থাকলে এই বয়সেও যে লেখাপাড়া করা যায় তার এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বাছিরন। হেলাল উদ্দীন বলেন, তিনি কখনো বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত হন না। লেখাপড়ায় তার ব্যাপক আগ্রহ। তিনি ভাল ফলাফল অর্জন করবেন বলে আশা করছেন শিক্ষকরা।
বাছিরনের পড়ালেখায় আগ্রহ দেখে তার পরিবারের সদস্যরাও বেশ খুশি। তার ছেলে আকবর আলী জানান, অল্প বয়সে মায়ের বিয়ে হওয়ায় লেখাপড়া করতে পারেননি। তবে নাতিদেরকে বিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া-আসার এক পর্যায়ে তিনিও ভর্তির ইচ্ছে প্রকাশ করেন। তাই আমরা অমত করিনি। মা-বাবা আমাদেরকে অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। তাই মায়ের আবদার পুরণ করতে পেরে আমরাও গর্বিত।