শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ৩ ডিসেম্বর ২০১৬
নাব্যতা সঙ্কটের কারণে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি নৌবন্দরগামী ৩৫টি সারবাহী কার্গো-জাহাজ যমুনা নদীর মাঝ পথে আটকা পড়েছে। ছোট জাহাজগুলো বন্দরে আসতে পারলেও বড় জাহাজগুলো মাঝ নদীতে আটকে আছে। আটকে পড়া জাহাজ থেকে ইজারাদাররা ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকায় করে কিছু সার বন্দরে আনার চেষ্টা করলেও এতে খরচ বেড়ে যাচ্ছে দ্বিগুণ।
গত দুই সপ্তাহ ধরে পাটুরিয়া-দৌলদিয়া এলাকায় আটকা পড়ার কারণে আসন্ন সেচ মৌসুমে উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলার ১৪টি বাফার গুদামে আপদকালীন সার মজুদের কাজ চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। সময় মত এ মজুদের কাজ সম্পন্ন করতে না পারলে সেচ মৌসুমে সারের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। বিআইডাব্লিউটিএ নাব্য সঙ্কট স্থানে ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু করলেও তা ধীরগতিতে চলতে থাকায় এ থেকে তেমন কোনো সুবিধা আসছে না বলে জারিয়েছেন বাঘাবাড়ি বন্দর ইজারাদাররা।
এদিকে, যমুনা নদীতে নাব্যতা না থাকায় বাঘাবাড়ি নৌবন্দরে সারবাহী জাহাজ তুলনামূলকভাবে কম আসার কারণে কাজ কর্ম কমে গেছে। এতে বন্দরের প্রায় দুই হাজার শ্রমিক অনেকটা বেকার সময় কাটাচ্ছেন। এতে তাদের উপার্জন কমে যাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে তারা কষ্টে জীবনযাপন করছেন।
এ ব্যাপারে বাঘাবাড়ি নৌবন্দর কর্মকর্তা এস এম সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ড্রেজিং চলছে, অল্পদিনের মধ্যে এ সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। আটকা পড়া জাহাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঘাবাড়ি বন্দরে চলে আসবে।
বিসিআইসির বগুড়া আঞ্চলিক অফিসের লিয়াজো অফিসার শামীম আহমেদ জানান, এ বছর উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার ইরি-বোরো ধান আবাদের জন্য বাফার ১৪টি গুদামে আগে থেকেই দুই লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন সার মজুদ করা আছে। এরপরেও আরও ৯ লাখ মেট্রিক টন সার বিভিন্ন পথে আমদানি করা হচ্ছে। এর সিংহভাগ সার বাঘাবাড়ি নৌবন্দর দিয়ে আমদানি করা হয়। এ নৌ রুটে নাব্যতা সঙ্কট সৃষ্টি হওয়ায় আপদকালীন সার মজুদের কাজ কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে। তবে এ অবস্থা সাময়িক।
বাঘাবাড়ি পোর্ট ইনচার্জ অব্দুস সালাম জানান, তার ছয়টি জাহাজ মাঝ নদীতে আটকা পড়েছে। ছয় থেকে সাতশ টনের জাহাজগুলো বন্দরে আসতে পারলেও ১২শ থেকে ১৩শ টনের জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারছে না। বাঘাবাড়ি বন্দরে সারবাহী জাহাজ কম আসায় তারাও আর্থিকভাবে চরম লোকসানে পড়েছেন। তিনি এ নৌ রুটের নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে দ্রুত ড্রেজিং কাজ শেষ করার দাবি জানান।