যাত্রীরা বিমানবন্দরে চরম বিড়ম্বনায়

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম ।  ১ ডিসেম্বর  ২০১৬

যাত্রীরা বিমানবন্দরে চরম বিড়ম্বনায়

যাত্রীরা বিমানবন্দরে চরম বিড়ম্বনায়

মঙ্গলবার। রাত তখন আনুমানিক সাড়ে ৮টা। হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদেশগামী শত শত যাত্রীর ভিড় লেগে আছে। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভেতরে প্রবেশের জন্য প্রাণান্তর প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলেন সৌদি আরব, কাতার, তুরস্ক ও মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের উদ্দেশে রওনা হওয়া যাত্রীরা।

কিন্তু ঘণ্টাখানেক লাইনে দাঁড়িয়েও অনেক যাত্রীই ভেতরে ঢুকতে পারছিলেন না। তাদেরই একজন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ মোজ্জাম্মেল হক। সপরিবারে মালয়েশিয়া বেড়াতে রওনা হয়ে অন্য যাত্রীদের মতো তারাও চরম বিড়ম্বনার শিকার হন।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘তিন ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে পৌঁছেও প্রবেশ গেটে ঢুকতে পারছিলাম না। কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষীদের অনুরোধ করলেও কোন গেট দিয়ে ঢুকতে হবে- সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিচ্ছিল না। সঠিক তথ্য না দিয়ে একবার তিন নম্বর টার্মিনাল আরেকবার চার নম্বর টার্মিনালে গিয়ে লাইনে দাঁড়ান বলে বিদায় করছিল।’

একবারের বেশি দুইবার সমস্যার সমাধান জানতে চেয়ে ধমক পর্যন্ত খেয়েছেন তিনি।

মালপত্র টানার জন্য ট্রলি খুঁজে পেতে একাধিক নিরাপত্তারক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও কেউই সাড়া দেননি তাকে।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এটা নাকি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। পাসপোর্ট, ভিসা থাকার পরেও যাত্রীদের অসম্মানের চোখে দেখা হয়,’ তা কাগজে-কলমে আন্তর্জাতিক হলেও গুণগত মানের দিক থেকে নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

অনেকক্ষণ পর একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে ফ্লাইট মিস হতে পারে- এ কথা জানিয়ে কোনোভাবে টার্মিনালের ভেতরে ঢুকে দেখেন ভেতরে একই অবস্থা। বাইরে থেকে যাত্রী ঢুকতে দেরি হওয়ায় বিভিন্ন এয়ারলাইনসের সামনে লাগেজ বুকিং, বোর্ডিং পাস সংগ্রহ, ইমিগ্রেশন ফরম পূরণ করে ইমিগ্রেশনের কাউন্টারের সামনেও দীর্ঘ লাইন। কিছুক্ষণ পর ইমিগ্রেশনের ভেতর থেকে অমুক ফ্লাইটের কতজন আছেন হাত তোলেন, দ্রুত কাউন্টারে চলে আসুন বলে ডাকছিল।

প্রতিটি ইমিগ্রেশন কাউন্টারের সামনে ভিড় দেখে এক পর্যায়ে কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা যাদের ফ্লাইট রাত ১১টা ও সোয়া ১১টায় তাদের ডেকে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে ইমিগ্রেশনের সামগ্রিক কাজ করান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইমিগ্রেশনের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, মঙ্গলবার রাতে ৬ নম্বর প্রবেশ গেটটি বিশেষ কোনো কারণে বন্ধ থাকায় বেশ কিছু ফ্লাইট বিলম্বিত হয়। তবে এ কারণে যাত্রীদের কেউ ফ্লাইট মিস করেনি বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বিমানবন্দরের এসব অনিয়ম আর দুরবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) কর্মকর্তা উইং কমান্ডার ইকবাল করিম বলেন, ‘বিশেষ কারণে ৬ নম্বর গেটটি বন্ধ রাখা হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কাছাকাছি সময়ে অবতরণ আর উড্ডয়নে অপেক্ষমাণ ছিল বেশ কিছু ফ্লাইট। যে কারণে হয়তো কিছুটা সমস্যা হতে পারে।’

 

Related posts