শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম। ১৬ মার্চ ২০১৬

প্রেমিকাকে তুলে নিতে এসে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা, আটক ৮
প্রেমিকাকে তুলে নিতে এসে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা, আটক ৮উদ্ধারকৃত দুটি মাইক্রোবাস।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় প্রেমিকার বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রেমিক। এসময় এলাকাবাসী ধাওয়া করে প্রেমিকের ৮ সহযোগীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে।
বুধবার ভোরে ফতুল্লার রগুনাথপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম মনিন্দ্র অধিকারী (৪৫), সে লালমনিরহাট ধলগ্রাম থানার কৃষ্ণকলি গ্রামের অপেন্দ্রনাথের ছেলে। মনিন্দ্র অধিকারীর মেঝ মেয়ে ঝর্ণা রানীকে নিয়ে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
আটকরা হলো- জুয়েল, বাবু, এসএস পিটার ওরফে জাহিদ হাসান, চালক মনিরুল ইসলাম তার ছোট ভাই চালক নজরুল ইসলাম, আলবার্ড সুশান্ত, নিয়াজ, হ্রদয়। এসময় দুইটি হাইচ মাইক্রোসহ কয়েকটি ছুরি উদ্ধার করা হয়।
তবে এলাকাবাসীর ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে গেছে প্রেমিক তুহিন।
জানা যায়, মনিন্দ্রনাথ স্বপরিবারে দীর্ঘদিন যাবত ফতুল্লার রগুনাথপুর এলাকায় এনামুলের বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করেন। তিনি পেশায় রিকশা চালক। তার ৩ মেয়ে ১ ছেলে। বড় মেয়ে বর্ণাকে বিয়ে দিয়েছেন, মেঝ মেয়ে ঝর্ণা রানী স্থানীয় হাজী পান্ডে আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী আর তার ছোট এক মেয়ে ও এক ছেলে।
ঝর্ণা রানী জানান, গত বছর কালীপূজায় রাজধানী ঢাকার শ্যামপুর থেকে তুহিনের ডিজিটাল সাউন্ড সিন্টেম ভাড়া এনে রগুনাথপুরে কালিপূজায় উৎসব করেন। ওই উৎসবেই তুহিনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। আর ওই দিনই তুহিন প্রেমের প্রস্তাব দেয় তাকে। এতে ঝর্ণা রানী তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ তুহিন মুসলিম আর ঝর্ণা রানী হিন্দু ধর্মের। এরপর ঝর্ণার মোবাইল নম্বার সংগ্রহ করে তুহিন প্রায় সময় তাকে উত্যক্ত করত।
ঝর্ণা রানী জানান, তুহিনের হুমকিতে এক পর্যায়ে তার সঙ্গে প্রথম সোনারগাঁওয়ে বাংলার তাজ মহলে ঘুরতে যায়। পরে দ্বিতীবার শ্যামপুর ইকোপার্কে বেড়াতে যায়। সর্বশেষ ৮ ফেব্রুয়ারি পাগলা মেরিএ্যান্ডারসন তুহিনের সঙ্গে দেখা করি। এরপর থেকে মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখি। এতে তুহিন তার বন্ধু তানভিরকে আমাদের বাসায় পাঠায়। তানভির আমাদের বাসায় এসে অনেক উচ্চবাচ্চ্য করে। এসময় স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে তানভিরকে মারধর করে। ওই সময় তানভিরের পরিবারের লোকজন পুলিশ নিয়ে আমাদের এলাকায়ও গিয়েছিলেন।
ঝর্ণা আরও জানান, সম্প্রতি ভারতে বসবাস করেন এক ছেলের সঙ্গে আমার বিয়ে কথাবার্তা চলছে। বিষয়টি তুহিন জানতে পেরে আমাকে অনেক হুমকি দেয় এবং আমার বাবাকে হত্যা করে আমাকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার হুমকিও দেয়। এরপর ভোরে লোকজন নিয়ে এসে আমার বাবাকে এলোপাথারী ছুড়িকাঘাত করে আমাকে মাইক্রোতে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাদের ধাওয়া করে আটক করেন।
ঘটনাস্থালে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক জানান, প্রেমিক তুহিনের ৮ সহযোগীকে দুইটি হাইচ মাইক্রোসহ (ঢাকা-মেট্রো-চ,১৫-৯৫৬৭, ঢাকা মেট্রো-ম, ০০-০৪৩৪) আটক করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের পিটুনীতে তুহিনের বন্ধু হ্রদয় আহত হয়েছে। তাকে শহরের খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপালে ভর্তি করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।
মনিন্দ্র অধিকারী’র মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।