শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ১ ডিসেম্বর ২০১৬
আজারবাইজানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলের উচ্চতম বৃহত্তর ককেশাস পর্বতমালার খিনালিক শহরে একটি সম্প্রদায় বসবাস করে, যারা নিজস্ব অনন্য ভাষা ও ঐতিহ্য নিয়ে শত শত বছর ধরে টিকে আছে।
খিনালিগ নামক সম্প্রদায়টির ভাষার নাম খিনালাগ। তাদের পূর্বপুরুষেরা ২ হাজার বছর আগেসেখানে বসবাস শুরু করেন বলে প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক গবেষণা থেকে ধারণা করা হয়।তবে অঞ্চলটিতে ভ্রমণকারীদের ধারণা, স্থানীয়রা সেখানে আছেন ৫ হাজার বছর আগে আলবেনীয় ককাস যুগ থেকেই। কারণ, একটি স্থানীয় কিংবদন্তিতে বলা হয়, খিনালিকেরজীবিত বাসিন্দারা বাইবেলে বর্ণিত নূহের বংশধর।
আজারবাইজানের সর্বোচ্চ শহর ককেশাসের কুবা জেলার অন্তর্গত খিনালিকে লোকাচার বিদ্যাচর্চাসহ নানা রহস্য লুকিয়ে আছে।
কুবা একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ও জাতিগত বৈচিত্র্য সমৃদ্ধ পার্বত্য জেলা। পার্বত্য ইহুদি, ট্যাটস্ও লেজগিনস্ এর মতো স্বতন্ত্র জাতিগোষ্ঠীগুলো সেখানকার পাহাড়ের কম ঢালে বসবাস করে। আন খিনালিগরা থাকে পাহাড়ের সর্বোচ্চ শিখরে।
পার্বত্য সকল সম্প্রদায়ই নিজেদের পরিচয় নিয়ে গর্ব করে।
কুবা জাতিগত বৈচিত্র্য উপস্থাপনের অংশ হিসেবে গত সেপ্টেম্বরে খিনালিক শহর পরিদর্শনকারীফটোগ্রাফার গেটি ওলেক্সান্দার রুপেটা বলেন, ‘খিনালিগ সম্প্রদায়ের মানুষেরা অবশ্য আমাদের বলেছিলেন, ‘আমরা আজারবাইজানীয় নই’।
অনন্য স্থানীয় ভাষা খিনালাগ এ শহরে একচেটিয়া। তবে ইউনেস্কো এটিকে গুরুতরভাবে বিপন্নবলে আখ্যা দিয়েছে। কারণ, খিনালিকের অল্প সংখ্যক বাসিন্দাই এ ভাষায় কথা বলতে পারেন।
তবে ভাষাটি টিকে থাকার এখনও আশা আছে। খিনালিকের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৩ শতাধিকস্থানীয় শিশুকে আজারবাইজানীয় ও ইংরেজির পাশাপাশি খিনালাগ ভাষায় শিক্ষা দেওয়া হয়।
খিনালিকের বিয়ের ধর্মাচার প্রজন্মের পর প্রজন্ম কঠোর ও বাধ্যতামূলকভাবে মেনে চলে। বিয়ে স্মৃতিরক্ষায় কনের পরিবার ছাল ছাড়ানো একটি ষাঁড়ের মাংস চায়ের সঙ্গে পরিবেশ করে।
রুপেটা বলেন, ‘চা খাওয়াটা খিনালিগ সম্প্রদায়ের কাছে একটি শাস্ত্রীয় অনুষ্ঠানের মতো। তাদের সংস্কৃতিতে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ’।