কখন, কোথায়, কীভাবে ঘুমাবেন

শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম ।  ৭   ডিসেম্বর  ২০১৬

কখন, কোথায়, কীভাবে ঘুমাবেন

কখন, কোথায়, কীভাবে ঘুমাবেন

সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে ঘরে ফিরতেই মন চায় একটু বিশ্রাম, আর সেজন্য সবচেয়ে উপযুক্ত হচ্ছে ঘুম।

অনেকে আছেন অফিস কিংবা ক্লাস থেকে ফিরে বাইরের পোশাক পরিবর্তন না করেই ঘুমিয়ে পড়েন। এসব কিছুর মূলে একটিই কারণ। তা হচ্ছে শারীরিক ক্লান্তি ও মানসিক অবসাদ। ঘুমের মাধ্যমে ক্লান্তি দূর হয়ে ও মস্তিষ্ক কিছু সময়ের জন্য বিশ্রাম পায়।

একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দিনে অন্তত ৭ ঘণ্টা ঘুমের দরকার হয়। এতে করে দেহ ও মনের ক্লান্তি দূর হয়। মেজাজ ফুরফুরে থাকে। ঠিকমতো ঘুম না হলে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। কাজেও মন বসানো সহজ হয় না। ঘুমের মাধ্যমে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন ভালো থাকে। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে স্মৃতিশক্তির দুর্বলতা দেখা যেতে পারে।

এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক ঘুম সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

কখন ঘুমাবেন?

দুপুরের খাবার পর কিছু সময় ঘুমানো ভালো। পাঁচ থেকে ১০ মিনিটের ঘুম আপনাকে মানসিকভাবে চাঙ্গা হতে সহায়তা করবে। এতে করে আপনার চিন্তাশক্তি ও কাজের গতি দুটোই বাড়বে। যদিও অধিকাংশ অফিসে দুপুরের বিরতিতে ঘুমানোর সুযোগ থাকে না।

রাতের ঘুম যত তাড়াতাড়ি ঘুমানো যায় ততই ভালো। বিদূষী নারী খনার বচনে আছে, ‘সকালে ঘুমায় আর যে সকালে উঠে তার কড়ি বৈদ্য না লুটে।’ আর তাই রাত ১১টার মধ্যে ঘুমানো স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। দেরিতে ঘুমালে ঘুম থেকে উঠতে ও দেরি হয়। আমাদের চারপাশে যারা সফল মানুষ তারা সবসময় ভোরে ঘুম থেকে ওঠেন।

রাত ১০টার পর স্মার্টফোন, ল্যাপটপ ব্যবহার না করাই ভালো। দীর্ঘ সময় টিভির পর্দা কিংবা মোবাইলের ডিসপ্লের দিকে তাকিয়ে থাকলে পিনিয়াল গ্ল্যান্ডের মাধ্যমে মস্তিষ্কে মেলাটনিন হরমোন নি:সরণে অসুবিধা হয়। এতে করে ঘুম ভালো হয় না। অন্ধকার কক্ষ ঘুমের জন্য বেশি উপযোগী।

কীভাবে ঘুমাবেন?

চিৎ হয়ে ঘুমানো স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এতে করে শরীরের কোথাও অতিরিক্ত চাপ পড়ে না। এ সময় দুই পায়ের পাতা দুদিকে ছড়িয়ে দিন। দুই পায়ের মাঝে কিছুটা গ্যাপ রাখতে পারেন। কারো কারো ক্ষেত্রে এতে নাকডাকার সমস্যা দেখা যেতে পারে। বিশেষ করে স্থূলাকারদের।

অনেকে ঘুমানোর সময় উপুড় হয়ে ঘুমান। এ প্রক্রিয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। এতে করে পেট ও পাকস্থলির ওপর চাপ পড়ে। দীর্ঘ সময় উপুড় হয়ে শোয়ার ফলে পাকস্থলির স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা কমে যায়।

 

ঘুমানোর সময় খেয়াল রাখুন যাতে আপনার বিছানার সঙ্গে বালিশের সামঞ্জস্য থাকে।  মাথার নিচে একাধিক বালিশ ব্যবহারে কারো কারো ক্ষেত্রে ঘাড়ব্যথা করতে পারে। নিজের বালিশ অদল-বদল না করাই ভালো।

একপাশে কাত হয়ে ঘুমানোর সময় দুই হাঁটুর মাঝে ছোট বালিশ কিংবা কোল বালিশ রাখতে পারেন। এতে শরীরে রক্তসঞ্চালনে ভারসাম্য বজায় থাকবে। শুধু একপাশে কাত হয়ে না ঘুমিয়ে এপাশ ওপাশ করে ঘুমাতে পারেন।

কোথায় ঘুমাবেন ?

সবসময় একই জায়গায় ঘুমানোর অভ্যাস করুন। এতে করে সহজেই ঘুম আসবে এবং খুব ভালো ঘুম হবে। অপরিচ্ছন্ন জায়গায় ঘুমানো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ঘুমানোর আগে বিছানা পরিষ্কার করে নিন। অপরিচ্ছন্ন বিছানায় ঘুমালে অ্যালার্জি কিংবা চর্মরোগের আশংকা থাকে। এতে করে ঘুমও ভালো হয় না।

নরম তুলতুলে বিছানার চেয়ে শক্ত বিছানা ঘুমের জন্য ভালো। নরম বিছানায় ঘুমালে স্পাইনে প্রয়োজনীয় ভারসাম্য থাকে না। এতে করে ঘাঁড়, পিঠ ও মেরুদণ্ডে ব্যথা বেদনা দেখা যেতে পারে। যাদের এ ধরনের সমস্যা আছে তারা বিছানার নিচে শক্ত কিছু ব্যবহার করতে পারেন।

লেখক: ইয়োগা ও বজ্রপ্রাণ প্র্রশিক্ষক, বাংলাদেশ ব্যুত্থান ফেডারেশন

রেইকি প্র্যাকটিশনার (সেকেন্ড ডিগ্রি)

 

Related posts