হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গঠনে আহ্বান রাষ্ট্রপতির


শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম ।  ১৫  আগস্ট ২০১৬

হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গঠনে আহ্বান রাষ্ট্রপতির

হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গঠনে আহ্বান রাষ্ট্রপতির



জাতীয় শোক দিবসে জাতির পিতাকে হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গঠনে আত্মনিয়োগে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, শোকাবহ ১৫ আগস্ট, জাতীয় শোক দিবস। বাঙালি ও বাংলাদেশের শোকের দিন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাত বার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের এ দিনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর স্ত্রী, পুত্র, পুত্রবধূসহ নিকট আত্মীয়গণ শাহাদাত বরণ করেন।

শোকাহত চিত্তে তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি। জাতীয় শোক দিবসে পরম করুণাময় আল্লাহর দরবারে শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাঙালি জাতির ইতিহাসে ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ এক কলঙ্কিত অধ্যায়। দেশের স্বাধীনতাবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে ঘাতকচক্রের হাতে ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান শহীদ হন। একইসঙ্গে শহীদ হন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, সহোদর শেখ নাসের, কৃষকনেতা আবদুর রব সেরনিয়াবাত, যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মনি ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, বেবী সেরনিয়াবাত, সুকান্ত বাবু, আরিফ এবং আব্দুল নঈম খান রিন্টু।

এ নৃশংস ঘটনা কেবল আমাদের ইতিহাসে নয়, পৃথিবীর ইতিহাসেও বিরল। শুধুমাত্র একজন রাষ্ট্রনায়ককে হত্যা করা নয় বরং মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে মুছে ফেলা এবং পরাজিত শক্তিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করাই ছিল হত্যাকারীদের উদ্দেশ্য।

তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা। ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে '৬৬ এর ৬-দফা, '৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, '৭০-এর নির্বাচনসহ বাঙালির মুক্তি ও অধিকার আদায়ে পরিচালিত প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন। এ জন্য তাঁকে জীবনে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে; সহ্য করতে হয়েছে অমানবিক নির্যাতন। বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে তিনি কখনো আপোস করেননি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, এ মহান নেতার চিন্তা-চেতনায় সবসময় কাজ করত বাংলা, বাঙালি ও বাংলাদেশ। তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য আজ এ দেশের মানুষের কাছে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন সত্তায় পরিণত হয়েছে। ঘাতকচক্র জাতির পিতাকে হত্যা করলেও তাঁর নীতি ও আদর্শকে মুছে ফেলতে পারেনি। যতদিন বাংলাদেশ ও বাঙালি থাকবে ততদিন জাতির পিতার নাম এ দেশের লাখো-কোটি বাঙালির অন্তরে চির অমলিন, অক্ষয় হয়ে থাকবে।

আবদুল হামিদ বলেন, বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে সারাজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত ‘সোনার বাংলা' প্রতিষ্ঠাই ছিল তাঁর স্বপ্ন। সদ্যস্বাধীন দেশকে পুনর্গঠনের মাধ্যমে তিনি সে কাজ শুরুও করেছিলেন। কিন্তু ঘাতকচক্র নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে তা স্তব্ধ করে দেয়। তাই সকলের দায়িত্ব হবে বঙ্গবন্ধুর অসম্পূর্ণ কাজকে সম্পূর্ণ করে বাংলাদেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করে তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ করা। তাহলেই চিরঞ্জীব এই মহান নেতার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হবে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে ‘ভিশন ২০২১' এবং ‘ভিশন ২০৪১' ঘোষণা করেছেন। বাংলাদেশ আজ মধ্য-আয়ের দেশে পরিণত হতে চলেছে। স্বাধীনতার হীরকজয়ন্তীতে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। এ জন্য প্রয়োজন সকলের সমন্বিত প্রয়াসের পাশাপাশি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদমুক্ত প্রগতিশীল সমাজ প্রতিষ্ঠা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিকাশ ও স্বাধীনতার পক্ষের সকল শক্তির দৃঢ় ঐক্য।
উপদেষ্ঠা সম্পাদক: রিন্টু আনোয়ার ,সম্পাদক: আবুল মনসুর আহমেদ, ঠিকানা : ৩৪, বিজয় নগর, ৪র্থ তলা, ঢাকা।, মোবাইল: +৮৮০ ১৭৫৩-৪১৭৬৭৬, ইমেইল : sheershareport@gmail.com. Developed by: R-itSoft