ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম ঘটছে সুশাসনের অভাবে


শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম ।  ২৪  মার্চ  ২০১৭

ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম ঘটছে সুশাসনের অভাবে

ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম ঘটছে সুশাসনের অভাবে



বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান মন্তব্য করেছেন ব্যাংকিং খাতের বেশ কিছু জায়গায় সুশাসন না থাকায় অনিয়মের ঘটনা ঘটছে ।তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতে সুশাসন খুবই প্রয়োজন। ব্যাংকিং খাতকে সামনে এগিয়ে নিতে হলে সুশাসনের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু  অনেক সময় দেখছি, ব্যাংকিং খাতে সুশাসনের অভাব রয়েছে। ফলে কিছু কিছু অনিয়মের অভিযোগও উঠছে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি এসব মন্তব্য করেন। বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী, বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলী, বিশ্বব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা ড. শামসুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক গৌতম প্রসাদ দাস বক্তব্য রাখেন। মূল গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ মহীউদ্দিন ছিদ্দিকী।

আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, ব্যাংকে অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ এবং পরিপালন যদি সঠিকভাবে কাজ না করে তাহলে ব্যাংকিং খাতে সুশাসন থাকবে না। আইসিসিবি ব্যাংকিং খাতের তৃতীয় নয়ন হিসেবে কাজ করে। তাই আইসিসিডি ডিভিশনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। আইসিসিডি ডিভিশনের দুর্বলতা কারণে অনিয়ম হচ্ছে উল্লেখ করে ডেপুটি গভর্নর বলেন, সুশাসনের অভাবে ব্যাংকের শাখা থেকে ডিপোজিটরদের ২ হাজার কোটি টাকা প্রধান শাখায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আবার অনেক সময় দেখা যায় ব্যাংকের বোর্ডের বাইরের লোকজন এসে বোর্ড মিটিং করছে। এগুলো ব্যাংকিং খাতের জন্য ভাল খবর নয়। এভাবে চলতে থাকলে ডিপোজিটরদের স্বার্থ রক্ষা করা সম্ভব হবে না।

নিজ নিজ জায়গা থেকে অর্পিত দায়িত্ব পালন করার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ম্যানেজমেন্টকে তার নিজ জায়গা থেকে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে হবে। তা ছাড়া অডিট ও আইসিসিডি ডিভিশনকেও স্বাধীনভাবে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকে সুপারভিশনের জন্য লোকবল কম উল্লেখ করে ডেপুটি গভর্নর বলেন, সুপারভিশনের জন্য লোকবল মাত্র ৭৫০ থেকে ৮০০ জন। কিন্তু সারাদেশে বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা রয়েছে সাড়ে ১২ হাজার। তাই লোকবলের অভাবে সব ধরনের সুপারভিশনে কিছু কিছু দুর্বলতা রয়েছে।

পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকের আইসিসিডি এখনও ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার। এমন অবস্থার পরিবর্তন না হলে ব্যাংকিং খাতের সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে না। তিনি বলেন, ব্যাংকারদের তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়াতে হবে। এটি করতে না পারলে ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম রোধ করা কঠিন।

বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলী বলেন,  যেসব ব্যাংকে অডিট বিভাগে জনবল কম আছে সেখানে সুশাসনের ঘাটতি রয়েছে। শতভাগ সুশাসন বজায় রাখতে অডিট বিভাগকে শক্তিশালী এবং স্বাধীনতা দেয়ার কোন বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, ব্যাংকের গ্রাহকদের দিক বিবেচনা করে  কেন্দ্রীয় ব্যাংক যাবতীয় পদক্ষেপ নেয়। নিরীক্ষা বিভাগকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেয়া হয়েছে এ নীতিমালায়।

বেসরকারি খাতের ‘ব্যাংক এশিয়া'র আইসিসিডি বিভাগের প্রধান সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আইসিসি আইনে অনেক দুর্বলতা রয়েছে। এসব দুর্বলতা দূর করলে ব্যাংকিং খাতে সুশাসন আরও জোরদার হবে।
উপদেষ্ঠা সম্পাদক: রিন্টু আনোয়ার ,সম্পাদক: আবুল মনসুর আহমেদ, ঠিকানা : ৩৪, বিজয় নগর, ৪র্থ তলা, ঢাকা।, মোবাইল: +৮৮০ ১৭৫৩-৪১৭৬৭৬, ইমেইল : sheershareport@gmail.com. Developed by: R-itSoft