|
পর্দা উঠল রিও অলিম্পিকেরশীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ৬ আগস্ট ২০১৬ ‘এক বিশ্ব-এক স্বপ্ন' এমন স্লোগান নিয়েই পর্দা উঠল রিও অলিম্পিকের। এবারের গেমস নিয়ে নানাবিধ বাধা ছিল, দানা বাঁধতে শুরু করেছিল অনেক ধরনের আশঙ্কা। কিন্তু সবকিছুকে পেছনে ফেলে শুরু হয়ে গেল ক্রীড়ার মহাযজ্ঞ। ২০৫ দেশের ১১ হাজারেরও বেশি এ্যাথলেট এবার অংশ নিচ্ছেন ২৮ ক্রীড়ার মোট ৩০৬ ইভেন্টে স্বর্ণ পদকের লড়াইয়ে। সারাবিশ্বের সব ক্রীড়াবিদেরই স্বপ্ন অলিম্পিকের মতো মর্যাদার আসরে অংশ নেয়া। কারণ এর চেয়ে বড় কোন আসর নেই বলেই এটিকে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ' হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। আর একবার শুরু হয়ে যাওয়ার পর আর সব সমালোচনা, শঙ্কা সব ধুয়ে মুছে গিয়ে সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ে প্রতিযোগিতা আকর্ষণ দেখতে। সেই আকর্ষণটা বেড়ে গেল বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামে বর্ণাঢ্য উদ্বোধনীর পর। আলোকের উজ্জ্বলতায় এতদিনের সব আঁধার দূরীভূত হলো। উদ্বোধনের আগেই কয়েকটি ইভেন্টের প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেলেও এবার আনুষ্ঠানিকভাবে রিও ডি জেনিরো শহর যাত্রা শুরু করল দক্ষিণ আমেরিকায় প্রথমবারের মতো মর্যাদার অলিম্পিক। বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোর ৫টায় শুরু হয় রিও অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। অন্য দেশগুলোর মতো এবারও বাংলাদেশের ৭ ক্রীড়াবিদ অংশ নিচ্ছেন। এবার বাংলাদেশের ক্ষুদ্র এ দলটির হয়ে মার্চপাস্টে পতাকাবহন করেছেন গলফার সিদ্দিকুর রহমান। তিনিই দেশের ইতিহাসে প্রথম অলিম্পিয়ান যিনি সরাসরি অলিম্পিকে সুযোগ করে নিয়েছেন। বাকি সবাই আগের মতোই ওয়াইল্ড কার্ড নিয়ে অংশ নিচ্ছেন। এ কারণেই সিদ্দিকুর এ সম্মান পেয়েছেন। অলিম্পিকে এতদিন অংশগ্রহণই মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের। তবে এবার গলফার সিদ্দিকুর রহমান ও শূটার আব্দুল্লাহ হেল বাকীকে ঘিরে স্বপ্ন বুনছে লাল-সবুজের দেশ। অলিম্পিকে প্রথমবারের মতো পদক জয়ের ইতিহাস গড়তে মুখিয়ে আছেন এ দু'জনই। মার্চপাস্টে ৭ ক্রীড়াবিদসহ বাংলাদেশের ১৬ সদস্যের দল অংশ নেয়। ব্রাজিলের অনেক সাধারণ মানুষই এবার অলিম্পিক আয়োজনের বিরোধিতা করেছে। কারণটা একইসঙ্গে ছিল বেহাল অর্থনৈতিক অবস্থা এবং অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি। তাছাড়া আছে জিকা ভাইরাসের জন্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি। নিরাপত্তা হুমকি। সবকিছুকে পেছনে ফেলে অবশ্য অনেক আয়োজন যেমন হয়েছে, তেমনি অলিম্পিক নিয়ে ব্রাজিলের অনেক মানুষ উৎসবেও মেতেছেন। ব্রাজিলের সাবেক এ রাজধানী, পুরনো এই শহর নতুন রূপে সাজানো হয় অলিম্পিককে ঘিরে। বিদেশী পর্যটক, দর্শকের শহর এখন রিও। মর্যাদার ক্রীড়া আসরের ছোঁয়ায় রূপ পাল্টে গেছে গোটা শহরের। ব্রাজিলের পতাকা হাতে উৎসবে মেতেছেন স্থানীয় দর্শকরাও। আর বিদেশীদের হাতে নিজ নিজ দেশের পতাকা। সব মিলিয়ে এতদিন ঝিমিয়ে থাকা রিও আবার জেগে ওঠে অলিম্পিক উপলক্ষে। যেন নতুন করে সমস্যা জর্জর ব্রাজিল গা ঝারা দিয়ে জেগেছে। এবারের আসরে কসোভো ও দক্ষিণ সুদানসহ ২০৫টি জাতীয় অলিম্পিক কমিটি (এনওসি) থেকে ১১০০০ এরও বেশি ক্রীড়াবিদ অংশগ্রহণ করছে। ২৮টি অলিম্পিক ক্রীড়ায় ৪১ ডিসিপ্লিনে ৩০৬ ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে। ইভেন্টগুলো আয়োজনের জন্য আয়োজক শহর রিও ডি জেনিরোর ৩৩ ভেন্যু এবং অতিরিক্ত হিসাবে ব্রাজিলে সর্ববৃহৎ শহর সাওপাওলো, রাজধানী শহর ব্রাসিলিয়া, ম্যানাস ও সালভাদর শহর থেকে ৫ ভেন্যু নির্বাচন করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্রাজিলের বিভিন্ন ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়েছিল। ব্রাজিলের ঐতিহ্যবাহী সাম্বা নৃত্য তো আছেই। পাশাপাশি থাকছে আরও অনেক চমক। প্রায় ৮০ হাজার দর্শক সরাসরি উপভোগ করেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এছাড়া বিশ্বের তিন বিলিয়ন মানুষ টিভিতে সরাসরি দেখেছেন জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ?শুরুতেই ছিল পতাকা নিয়ে এ্যাথলেটদের মার্চপাস্ট। এরপর পর্যায়ক্রমে নানা শো। সব শেষে ছিল বর্ণিল আতশবাজি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সিটি অব গড বিখ্যাত চলচ্চিত্রের পরিচালক ফার্নান্ডো মেয়ারলেস। তার সঙ্গে ছিলেন আন্ড্রুচা ওয়াশিংটন ও ড্যানিয়েলা টমাস। মজার ইভেন্টে গান করেন সাম্বা সিঙ্গার এলজা সোয়ারেস। তিনি ব্রাজিলের সাবেক কিংবদন্তি ফুটবলার গ্যারিঞ্চার স্ত্রী। তার সঙ্গে থেকে ১২ বছর বয়সী এমসি সোফিয়া কথা বলেছেন বর্ণবাদের বিরুদ্ধে। এরপর একে একে মঞ্চ মাতিয়েছেন ক্যারল কনকা, লুডমিলা, গিলবার্তো গিল, কায়েটানো ভ্যালোসো। সুরের মায়াজালে দর্শকদের মোহিত করতে ছিলেন ব্রাজিলের বিখ্যাত সব সঙ্গীতশিল্পী। লাইট এ্যান্ড সাউন্ড শো এর মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয় ব্রাজিলে পর্তুগীজ উপনিবেশের ইতিহাস। উদ্বোধনী মঞ্চ আলোকিত করেন ব্রাজিলের সুন্দরী এবং সুপার মডেলরা। ছিল কিংবদন্তি ব্রাজিলিয়ান মডেল গিজেল বান্ডচেনের । |
উপদেষ্ঠা সম্পাদক: রিন্টু আনোয়ার ,সম্পাদক: আবুল মনসুর আহমেদ, ঠিকানা : ৩৪, বিজয় নগর, ৪র্থ তলা, ঢাকা।, মোবাইল: +৮৮০ ১৭৫৩-৪১৭৬৭৬, ইমেইল : sheershareport@gmail.com. Developed by: R-itSoft |