গুলশান হামলা: হাসনাত ও তাহমিদের ছবি কি নতুন করে ভাবাচ্ছে?


গুলশান হামলা: হাসনাত ও তাহমিদের ছবি কি নতুন করে ভাবাচ্ছে?

গুলশান হামলা: হাসনাত ও তাহমিদের ছবি কি নতুন করে ভাবাচ্ছে?



শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ০৮  আগস্ট ২০১৬

বিবিসি বাংলা, ঢাকা

সম্প্রতি প্রকাশিত এ ছবিতে দেখা যাচ্ছেে হাসনাত করিম ও তাহমিদ খান, তৃতীয় এক ব্যক্তির সাথে কথা বলছেন।

গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার ঘটনায় দু'জন সন্দেহভাজন – হাসনাত করিম এবং তাহমিদ খানের কিছু ছবি রবিবার বিভিন্ন সংবাদপত্র এবং অনলাইনে ছাপা হয়েছে।

তারপর এসব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার হচ্ছে।

ছবিতে দেখা যাচ্ছে হাসনাত করিম এবং তাহমিদ খান দু'জনে হলি আর্টিজান বেকারির ছাদে দাঁড়িয়ে একজনের সাথে কথা বলছেন।

তৃতীয় ব্যক্তিটিকে অন্যতম হামলাকারী রোহান ইমতিয়াজ বলে বর্ণনা করছেন অনেকে।

নতুন এ ছবিগুলো প্রকাশিত হবার পর এ দু'জনকে নিয়ে অনেকের মাঝে আবার নতুন চিন্তা শুরু হয়েছে।

এ ছবিগুলো প্রকাশিত হবার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই হাসনাত করিম এবং তাহমিদ খানের দিকে সরাসরি আঙ্গুল তুলছেন।

অনেকে বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন যে গুলশান হামলার পিছনে এই হাসনাত ও তাহমিদের হাত রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতার শিক্ষক শামীম রেজা মনে করেন, হাসনাত এবং তাহমিদের সম্পৃক্ততা নিয়ে যাদের মনে সন্দেহ ছিল, এই ছবি সে সন্দেহকে আরো জোরালো করবে।

মি: রেজা বলছেন , “আপনি যদি ধরে নেন যে ছবিটা একটা মুহুর্ত, তাহলে আপনি তার একটা ধারণা পাবেন। আবার একই সাথে মনে রাখতে হবে ছবিতে যে মুহুর্ত ধরা হয়েছে সেটা একটা প্রক্রিয়ারও অংশ"।

এই ছবিগুলোর মাধ্যমে হাসনাত এবং তাহমিদ সম্পর্কে দর্শকদের মনে একটি ধারণা তৈরি করবে।

হাসনাত ও তাহমিদের ছবি কিসের ইঙ্গিত দিচ্ছে?

গুলশান হামলা: হাসনাত ও তাহমিদের ছবি কি নতুন করে ভাবাচ্ছে?

গুলশান হামলা: হাসনাত ও তাহমিদের ছবি কি নতুন করে ভাবাচ্ছে?



Image caption

নতুন এ ছবিগুলো প্রকাশিত হবার পর হাসনাত ও তাহমিদকে নিয়ে অনেকের মাঝে আবার নতুন চিন্তা শুরু হয়েছে।

গুলশানে জিম্মিদশা অবসানের পরপরই হাসনাত ও তাহমিদকে গোয়েন্দা পুলিশের জিম্মায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গত একমাস এ দু'জন কার হেফাজতে ছিলেন তা নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা ছিল।

প্রায় একমাস এ দু'জনের অবস্থান নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে নানা জল্পনা-কল্পনা হয়েছে।

এ সময়ের মধ্যে হাসনাত ও তাহমিদের মুক্তির জন্য এ দু'জনের পরিবার এবং বন্ধুদের তরফ থেকে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক প্রচারণাও করা হয়েছিল।

কোন কোন সংবাদমাধ্যম এরই মধ্যে গুলশান হামলার জন্য হাসনাত ও তাহমিদকে অভিযুক্ত করেছে।

আবার অভিযুক্তদের পরিবার এবং বন্ধু মহল থেকে বলা হয়েছে তারা ঘটনার শিকার।

কিন্তু নতুন ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে, রোহান ইমতিয়াজের গলায় একটি রাইফেল ঝোলানো। এছাড়া ছবিতে বোঝা যাচ্ছে, তাহমিদ খানের হাতে একটি পিস্তল ধরা।

তিন জনকে দেখে ইঙ্গিত মিলছে যে তারা কোন একটি বিষয় নিয়ে আলাপ করছেন।

অনেকে আবার বলছেন এ ছবি দেখে চট করে কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া ঠিক হবে না।

হাসনাত ও তাহমিদের ছবি কিসের ইঙ্গিত দিচ্ছে?

গুলশান হামলা: হাসনাত ও তাহমিদের ছবি কি নতুন করে ভাবাচ্ছে?

গুলশান হামলা: হাসনাত ও তাহমিদের ছবি কি নতুন করে ভাবাচ্ছে?



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতার শিক্ষক শামীম রেজা মনে করেন, হাসনাত এবং তাহমিদের সম্পৃক্ততা নিয়ে যাদের মনে সন্দেহ ছিল, এই ছবি সে সন্দেহকে আরো জোরালো করবে।

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক মুহাম্মদ নূরুল হুদা বলেন, “আমিতো স্টিল ছবি দেখছি। ফলে একটা অবস্থায় একজনকে দেখছি। পুরো পিকচার পাচ্ছি না"।

মি: হুদা বলেন, তদন্তকারীরা এ ছবিগুলোকে কিভাবে ব্যাখ্যা করছেন এবং সর্বোপরি আদালত সেটিকে কিভাবে গ্রহণ করবে তার উপর পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে।

হামলাকারী রোহান ইমতিয়াজের সাথে ছবিতে হাসনাত করিম এবং তাহমিদ খানের মধ্যে কোন উদ্বেগ বা উত্তেজনার ছাপ ছিল না। বরং শান্ত এবং ধীর-স্থির আলাপচারিতায় তিনজন মগ্ন বলে মনে হচ্ছে।

এই ছবিগুলো বিভিন্ন খবরের কাগজে ছাপা হয়েছে। সে ছবিগুলো দিয়ে একটি পত্রিকা এমন শিরোনামও করেছে – "হাসনাত করিমই খলনায়ক"।

এই ছবি প্রকাশিত হবার পরেও দু'দিন পার হলেও হাসনাত করিম এবং তাহমিদ খানের পরিবারের দিক থেকে সংবাদমাধ্যম কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন বক্তব্য আসেনি।

এই ছবিগুলো কিভাবে সংবাদমাধ্যমে এসেছে সেটি অবশ্য জানা যাচ্ছে না।

যেসব পত্রিকা এ ছবিগুলো ব্যবহার করেছে তারা সুনির্দিষ্টভাবে কোন সূত্র উল্লেখ করেনি।

কয়েক সপ্তাহ আগে ঢাকার কল্যাণপুর অভিযানে নিহত সন্দেহভাজন জঙ্গিদের ছবি পুলিশের তরফ থেকে সংবাদমাধ্যমে দেয়া হয়েছিল।

গুলশান হামলা: হাসনাত ও তাহমিদের ছবি কি নতুন করে ভাবাচ্ছে?

গুলশান হামলা: হাসনাত ও তাহমিদের ছবি কি নতুন করে ভাবাচ্ছে?



হাসনাত ও তাহমিদের ছবি কিসের ইঙ্গিত দিচ্ছে?

ফেসবুকে এরই মধ্যে ‘ফ্রি তাহমিদ' নামে একটি পেইজ তৈরি করা হয়েছে যেখানে ৬৮ হাজার লাইক আছে।

অনেকের মনে বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।

তাহমিদের হাতে পিস্তল কেন? কেন তারা এতো শান্তভাবে আলাপ করছিলেন?

যদি বন্দুকের মুখে হামলাকারীরা তাদের বাধ্য করতো, তাহলেতো হাসনাত ও তাহমিদের এতো শান্ত থাকার কথা নয়।

অধ্যাপক শামীম রেজা মনে করেন যে মুহুর্তে অভিযুক্তদের পক্ষে-বিপক্ষে নানা ধরনের আলোচনা হচ্ছে, ঠিক সে সময়ে এ ছবিগুলো বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।

ফেসবুকে এরই মধ্যে ‘ফ্রি তাহমিদ' নামে একটি পেইজ তৈরি করা হয়েছে যেখানে ৬৮ হাজার লাইক আছে।

সেই পেইজে দেখা যাচ্ছে তাহমিদের বিদেশী বন্ধুরা তার মুক্তির জন্য নানাভাবে আবেদন করছেন।

সে প্রচারণার কারণে অনেকে ধারণা করতে শুরু করেছিলেন যে, গুলশান হামলার জন্য হাসনাত ও তাহমিদকে ‘বলির পাঁঠা' বানানোর চেষ্টা চলছে।

কিন্তু সাম্প্রতিক ছবিগুলো এ দু'জন সম্পর্কে অনেকের মনে ভিন্ন ধারণা তৈরি করছে।

অনেকে প্রশ্ন তুলছেন , হাসনাত ও তাহমিদ যদি জড়িত না থাকে তাহলে হামলাকারী রোহান ইমতিয়াজের সাথে তাদের কিসের এতো আলোচনা?

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নুরুল হুদা বলেন, বাংলাদেশের সাক্ষ্য আইনে ছবি একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল।

গুলশান হামলা: হাসনাত ও তাহমিদের ছবি কি নতুন করে ভাবাচ্ছে?

গুলশান হামলা: হাসনাত ও তাহমিদের ছবি কি নতুন করে ভাবাচ্ছে?



পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক মুহাম্মদ নুরুল হুদা।

মি: হুদা বলেন, “পিকচার (ছবি)তো নরমালি (সাধারণত) সত্যি কথা বলবে। আমরা ধরে নিতে পারি। যদি না সেটা ডক্টরড (তৈরি) হয়"।

তবে ছবির পারিপার্শ্বিকতাও দেখতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এতদিন ধরে এ দু'জন সম্পর্কে অনেকের মনে এক ধরনের চাপা সহানুভূতি লক্ষ্য করা যাচ্ছিল।

তবে এ ছবিগুলো প্রকাশিত হবার পর সেটি দ্রুত বদলে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।

ফেসবুকে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখে একটি ধারণা মিলছে।

তবে পুলিশের দিক থেকে এরই মধ্যে বলা হয়েছে, হাসনাত করিম এবং তাহমিদ খানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখনই চূড়ান্ত কোন মন্তব্য করতে পারছেন না পুলিশ কর্মকর্তারা।
উপদেষ্ঠা সম্পাদক: রিন্টু আনোয়ার ,সম্পাদক: আবুল মনসুর আহমেদ, ঠিকানা : ৩৪, বিজয় নগর, ৪র্থ তলা, ঢাকা।, মোবাইল: +৮৮০ ১৭৫৩-৪১৭৬৭৬, ইমেইল : sheershareport@gmail.com. Developed by: R-itSoft