ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ


শীর্ষরিপো্র্ট ডটকম ।  ৩  নভেম্বর  ২০১৬

ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ

ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ



ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গত রাতে (বুধবার)। তাই এরই মধ্যে ইলিশ ধরতে উপকূলীয় এলাকাসহ নদ-নদীতে নেমে পড়েছেন জেলেরা। ইলিশের আড়তগুলো আবারো সরগরম হয়ে উঠেছে। আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে স্থানীয় বাজারে আবারো পাওয়া যাবে জাতীয় মাছ ইলিশ। তবে রাজধানীর পাইকারি মোকামে আজ ইলিশের দেখা  মেলেনি।

জানা যায়, পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপালি পয়েন্ট, ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার উত্তর তজুমদ্দিন থেকে পশ্চিম সৈয়দ আওলিয়া পয়েন্ট, চট্টগ্রামের কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর কুতুবদিয়া থেকে গণ্ডারমারা পয়েন্ট, চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার শাহেরখালী থেকে হাইতকান্দী পয়েন্ট পর্যন্ত মোট সাত হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাসহ আরো ২৭ জেলায় এ নিষেধাজ্ঞা ছিল।

তবে, নিরাপদ প্রজননের মাধ্যমে ইলিশের বংশ বিস্তারের লক্ষ্যে টানা ২২ দিনের অবরোধ গত বুধবার মধ্যরাত থেকে উঠে গেলেও ১ নভেম্বর থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত সারা দেশে জাটকা আহরণ, পরিবহন ও বিপণনে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। ফলে ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও জাটকা আহরণ, পরিবহন ও বিপণন বন্ধ থাকবে আগামী সাত মাস।

সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দেশে ইলিশের উৎপাদন ও সহনীয় আহরণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মৎস্য বিজ্ঞানীদের সুপারিশের আলোকেই সরকার ‘মৎস্য সংরক্ষণ আইন-১৯৫০'-এর আওতায় আশ্বিনের বড় পূর্ণিমার দিনসহ এর আগের ৪ দিন ও পরের ১৭ দিন এবার উপকূলের প্রায় সাত হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকার ইলিশ মূল প্রজনন ক্ষেত্রে সব ধরনের মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ করে। পাশাপাশি সারা দেশেই ইলিশের আহরণ, পরিবহন ও বিপণন বন্ধ ছিল।

মৎস্য অধিদফতরের মতে, গত ২২ দিনের অবরোধ চলাকালীন সারা দেশে বেআইনিভাবে ইলিশ আহরণের দায়ে প্রায় ১ হাজার ৭০০ মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় সারা দেশে প্রায় ৫০ লাখ টাকা জরিমানা আদায় ছাড়াও প্রায় ১ হাজার ২০০ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে,  ইলিশ মাছ প্রতিদিন স্রোতের বিপরীতে প্রায় ৭১ কিলোমিটার বিচরণ করে থাকে। ইলিশ সারা বছর ডিম ছাড়লেও আশ্বিনের বড় পূর্ণিমার আগে-পরে শতকরা ৬০ থেকে ৭০ ভাগেরও বেশি মা ইলিশ প্রজনন করে থাকে বিধায় ২০০৭ সাল থেকে এ সময়ে আহরণে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়। এতে করে প্রচুর পরিমাণ মা ইলিশ আহরণ থেকে রক্ষা পাচ্ছে। ফলে দেশে ইলিশের উৎপাদন প্রতি বছর ৪ থেকে ৮ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে ইলিশের একক অবদান ১ শতাংশেরও বেশি। মৎস্য সম্পদে একক প্রজাতি হিসেবে এর অবদান প্রায় ১২ থেকে ১৩ শতাংশ।

মৎস্য অধিদফতরের সুপারিশের আলোকে এবারো নিম্ন মেঘনা নদী, শাহবাজপুর চ্যানেল ও তেঁতুলিয়া নদীতে মার্চ ও এপ্রিল এবং পটুয়াখালীর আন্ধারমানিক নদীতে নভেম্বর-জানুয়ারি সময়কালকে অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ রাখা হবে। এছাড়াও শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা এবং দক্ষিণে চাঁদপুর জেলার মতলব ও শরীয়তপুর উপজেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার মধ্যে অবস্থিত পদ্মা নদীর ২০ কিলোমিটার এলাকায় মার্চ-এপ্রিল মাসে দেশের পঞ্চম অভয়াশ্রমে ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকবে।

পাশাপাশি বরিশালের হিজলা উপজেলার নাছকাটি পয়েন্ট, হরিনাথপুর পয়েন্ট, ধুলখোলা পয়েন্ট এবং মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ভাষান চর পয়েন্ট এলাকার মেঘনার শাখা নদী, হিজলা উপজেলার ধর্মগঞ্জ ও নয়া ভাঙনী নদী এবং মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার লতা নদীর ৬০ কিলোমিটার এলাকায় ইলিশ ও জাটকার ষষ্ঠ অভয়াশ্রম হিসেব ঘোষণার সুপারিশ করা হয়েছে মৎস্য বিজ্ঞানীদের তরফ থেকে।

উল্লেখ্য, দেশের ইলিশ প্রজনন-প্রধান অঞ্চলে গত ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ ছিলো।
উপদেষ্ঠা সম্পাদক: রিন্টু আনোয়ার ,সম্পাদক: আবুল মনসুর আহমেদ, ঠিকানা : ৩৪, বিজয় নগর, ৪র্থ তলা, ঢাকা।, মোবাইল: +৮৮০ ১৭৫৩-৪১৭৬৭৬, ইমেইল : sheershareport@gmail.com. Developed by: R-itSoft