|
আজ শাহজালালে আধুনিক রাডার স্থাপনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে বৈঠকশীর্ষরিপো্র্ট ডটকম । ৩ নভেম্বর ২০১৬ ![]() আজ শাহজালালে আধুনিক রাডার স্থাপনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে বৈঠক হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বাড়াতে পুরনো রাডার সরিয়ে নতুন রাডার স্থাপনের কাজ ১১ বছর ধরে আটকে আছে। চার দফা দর বাড়ানো হলেও বিমানবন্দরের রাডার ক্রয়ে কার্যত কোনো অগ্রগতি হয়নি। পিপিপির আওতায় প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনার জন্য আজ বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। আজকের বৈঠকের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে পরবর্তীতে এটি পাঠানো হবে অর্থ ও ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে। সেখানে অনুমোদন পাওয়ার পর ডিসেম্বরের মধ্যেই দরপত্রের কার্যাদেশ দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। সূত্র জানায়, ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকার বেশি ব্যয়সংবলিত প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য সম্প্রতি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বেবিচকের চেয়ারম্যানকে প্রধান করে গঠিত কোয়ালিফিকেশন অ্যান্ড টেকনিক্যাল ইভালুয়েশন কমিটি যাচাই-বাছাই করে প্রস্তাবটি মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন জাগো নিউজকে বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আধুনিক রাডার স্থাপন যেমন ব্যয়বহুল তেমনি গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেই হবে না। এটি যেনো আগামীতেও লম্বা সময় ব্যবহারোপযোগী থাকে, আমরা সে দিকেও দৃষ্টি রাখছি। তিনি বলেন, বেবিচক থেকে প্রকল্পের একটি আর্থিক মূল্যায়ন মন্ত্রণালয়ে এসেছে। তবে বিস্তারিত আলোচনার আগে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা যাচ্ছে না। আগে আলোচনা করে নেই। পরে সবই বলবো। জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে পিপিপির অংশীদার চেয়ে গত বছর ৮ নভেম্বর দরপত্র আহ্বান করে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। দরপত্র আহ্বানের ২১ দিনের মধ্যে দর জমা দেয়ার কথা থাকলেও প্রায় সাতবার পেছানো হয় এর তারিখ। সর্বশেষ গত ২২ জুন দরপত্র জমা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে গত বছরের ১৪ ও ১৫ ডিসেম্বর সম্ভাব্য ঠিকাদারদের উপস্থিতিতে প্রি-বিড সভা অনুষ্ঠিত হয়। দেশি-বিদেশি ১৭টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এতে অংশ নেন। প্রি-বিড সভা শেষে বেবিচক সাইট ভিজিটের তারিখ নির্ধারণ করে। ১৬টি প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নেয়। গত ২২ জুন দেশি-বিদেশি মোট চারটি প্রতিষ্ঠান দর প্রস্তাব জমা দেয়। এর মধ্যে মেসার্স এরোনেস ইন্টারন্যাশনাল ফ্রান্সের থ্যালেস, মেসার্স করিম অ্যাসোসিয়েটস কানাডার রেডিয়ন, উইংস এভিয়েশন স্পেনের ইন্দ্রা ও চতুর্থ প্রতিষ্ঠান মেসার্স গেকি তোশিবার রাডার স্থাপনের প্রস্তাব জমা দেয়। প্রাথমিক বাছাইয়ে দুটি প্রস্তাব নন-রেসপন্সিভ হয়। বাকি দুটি প্রতিষ্ঠান কারিগরি মূল্যায়নের জন্য যোগ্য বিবেচিত হয়। যদিও করিম অ্যাসোসিয়েটসের এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নে আগের কোনো অভিজ্ঞতা নেই বলে অভিযোগ রয়েছে। বেবিচক সূত্রে জানা যায়, ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের গাইডলাইন অনুযায়ী ২০১৭ সালের মধ্যে বিশ্বের সব বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি), এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট (এটিএম) ব্যবস্থা বাধ্যতামূলকভাবে যুগোপযোগী করতে হবে। এরই অংশ হিসেবে বেবিচক প্রকল্পটি হাতে নেয়। এ প্রকল্পে প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি রাডার স্থাপন, ওয়াইড এরিয়া মাল্টিল্যাটারেশন (ডব্লিউএএম) ও এডিএস-বি স্থাপন, এটিএস সেন্টার আপগ্রেড, কন্ট্রোল টাওয়ার বিল্ডিং স্থাপন, ভিএইচএস, এক্সটেন্ডেড ভিএইচএস, এইচএফ, মাস্টার ক্লক, আরসিএজি, রেকর্ডিং সিস্টেম ও ভিসিসিএস স্থাপন করা হবে। উল্লেখ্য, ২০১২ সালে ১৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে রাডার ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের জন্য একটি আনসলিসিটেড প্রস্তাব পায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান করিম অ্যাসোসিয়েটস ওই প্রস্তাব দেয়। পরে ২০১৩ সালে অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি মাল্টিমোড সার্ভিল্যান্স সিস্টেম (রাডার) শীর্ষক প্রকল্পটি ৩৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে পিপিপির মাধ্যমে বাস্তবায়নের নীতিগত অনুমোদন দেয়। ওই ব্যয় পরে বেড়ে হয় ৫৫৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। পিপিপির অংশীদার দরপত্র আহ্বান করলে করিম অ্যাসোসিয়েটস দর দেয় প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। তবে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে কারিগরি ও আর্থিক মূল্যায়নের পর একই প্রকল্পের ব্যয় আবারো বেড়ে হচ্ছে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে। এভাবে কাজ শুরুর আগেই দফায় দফায় বাড়ছে গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পের ব্যয়। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পুরনো রাডার প্রতিস্থাপনে বেবিচক উদ্যোগ নেয় ২০০৫ সালে। আধুনিক রাডার বসানোর জন্য ডেনিস অর্থায়নে কনসালট্যান্ট নিয়োগ করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। আন্তর্জাতিক উপযোগী সিস্টেমসহ রাডার স্থাপনের বিষয়ে ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে কনসালট্যান্ট প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনের আলোকে ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হলে তিনটি প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নেয়। উন্মুক্ত দরপত্রে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ১০০ কোটি টাকার নিচে এ কাজ সম্পন্ন করতে চেয়েছিল। কিন্তু সুনির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়ার লক্ষ্যে দরপত্র বাতিল করে বেবিচক। ২০১১ সালের মার্চে দ্বিতীয়বার দরপত্র আহ্বান করা হলে চারটি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। টেন্ডার দুর্নীতির অভিযোগে রাডার স্থাপন কাজে ডেনিশ অর্থায়ন বাতিল হয়ে যায়। পরে ২০১৩ সালে জাপান সরকারের অনুদানে ১৮০ কোটি টাকায় এ কাজ সম্পন্নের প্রস্তাব দিয়েছিল জাইকা। |
| উপদেষ্ঠা সম্পাদক: রিন্টু আনোয়ার ,সম্পাদক: আবুল মনসুর আহমেদ, ঠিকানা : ৩৪, বিজয় নগর, ৪র্থ তলা, ঢাকা।, মোবাইল: +৮৮০ ১৭৫৩-৪১৭৬৭৬, ইমেইল : sheershareport@gmail.com. Developed by: R-itSoft |